Friday, 23 January 2015

কল্পিত আদিম যুগ সম্পর্কে কিছু কথা

আমাদেরকে ছোট থেকেই একটা কল্পিত বানোয়াট আদিম যুগের ধারনা শেখানো হয়। যে যুগে মানুষ আগুন জ্বালাতে পারতো না, বাস করতো বনে জঙ্গলে গুহায়, পরিধান করতো গাছের লতাপাতা পশুর চামড়া, ক্ষুধা নিবারনের জন্য খেত কাচা মাংস।
সত্যিই কি এমন কোন আদিম যুগ ছিল?
যারা ধর্ম বিশ্বাস করে না তারাই এই মিথ্যা আদিম যুগের ধারনার উদ্ভাবক। এরা যেমন আদিম যুগকে বিশ্বাস করে তেমনি বানর থেকে মানুষ হওয়ার অদ্ভুত ধারনাও মানে।
আমাদের ইসলাম ধর্মে স্পষ্ট করে বর্ননা করা আছে কিভাবে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে এবং কিভাবে পৃথিবিতে এসে বসবাস করা শুরু করেছে। আদিম যুগ বলতে
কোন যুগ ছিলো না। হয়তো কখনো কোন এক গোষ্ঠি কোন কারনে ধংস হয়ে যাওয়ার পরে সামান্য যে কয়জন বেচে থাকতো তারা সাময়িকভাবে কিছুটা আদিম যুগের মানুষের মত বাস করতে বাধ্য হতো। পুরো পৃথিবির লোক এক সঙ্গে আদিম ছিলো এটা একেবারে বানোয়াট। প্রত্যেক যুগেই মানুষ সভ্য ছিলো এবং সেই সাথে কিছু সংখ্যক মানুষ বা গোষ্ঠি প্রযুক্তির সহায়তা না নিয়ে প্রকৃতির উপর নির্ভর করতো।
বিভিন্ন সময়ে আবিষ্কৃত বিভিন্ন সভ্যতাই আমাদেরকে জানিয়ে দেয় হাজার হাজার বছর আগেও আধুনিক সভ্যতা ছিলো এবং সেই সব আধুনিক সভ্যতা বর্তমানের অত্যাধুনিক মানুষের কাছেও চরম বিস্ময়। আসলেই কি বিস্ময়? যারা আদিম যুগকে বিশ্বাস করে তাদের কাছে অবশ্যই বিস্ময়। কিন্তু মুসলমানদের কাছে কখনোই নয়।
নিজেদের চাহিদা নিবারনের জন্য যা জানা দরকার তা প্রত্যেকটা যুগের মানুষেই জানতো, প্রযুক্তির বিষয়েও তাদের জ্ঞান ছিলো, জ্ঞান ছিলো চিকিত্‍সা বিজ্ঞানেও। এ বিষয়টা চিকিত্‍সা বিজ্ঞান দিয়ে একটু বোঝাই। আপনি বলতে পারেন, আদিম যুগের মানুষ চিকিত্‍সা বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতো না, অসুখ হলে তাদের বাচার উপায় থাকতো না। আপনার ধারনাটা আসলে ভুল। আদিম যুগেও গাছগাছালি ছিলো। সর্দি জ্বরের মত সাধারন অসুক বিসুখ তো ঔষুধি গাছের মাধ্যমেও ভালো হয়। আয়ুর্বেদিক ঔষুধ সম্পর্কে তাদের ভালো ধারনা ছিলো। তখন হয়তো যক্ষার ঔষধ ছিলো না, তাই যক্ষা হলে মানুষ মারা যেত। কিন্তু এটাও ঠিক তখন কিন্তু ক্যান্সার এইডস ছিলো না। তখন মরতো যক্ষা হয়ে আর এখন মানুষ মরে ক্যান্সার এইডস হয়ে। তখনকার মানুষ যক্ষার চিকিত্‍সা জানতো না আর এখনকার মানুষ ক্যান্সার এইডস এর চিকিত্‍সা জানে না। যখন মানুষ ক্যান্সার এইডস এর চিকিত্‍সা আবিষ্কার করবে তখন হয়তো নতুন আরেক মরনঘাতি অসুখের আবির্ভাব ঘটবে। মহান আল্লাহতায়ালা সব কিছুর মাঝেই সমতা তৈরি করে দেন। তাই আগে প্রযুক্তির জ্ঞান কম হলেও মানুষ ভালভাবেই চলতে পারতো। এটা তাদের অজ্ঞতা নয়। আর যদি অজ্ঞতাই বলা হয় তাহলে সেই অজ্ঞতা এখনও আছে এবং এই অজ্ঞতা থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। কারন মানুষ এক অজ্ঞতা থেকে বের হলেই তার সামনে নতুন আরেক অজ্ঞতা এসে হাজির হবে।
একটু জ্ঞান থাকলেই মানুষকে গুহায় থাকার প্রয়োজন হয় না, প্রয়োজন হয় না কাচা মাংস খেতে। আর এই স্বাভাবিক জ্ঞানগুলো মানুষের জন্মগত। মানুষ গরু ছাগলের মত না ভেবে থাকতে পারে না, মানুষের মাথা সব সময়ই কাজ করে, চিন্তা করতে থাকে। গাছগাছালির সাহায্যে বাড়ি ঘর তৈরি, পাথর ঘষে আগুন জ্বালানো, বিজ বুনে ফসল ফলানোর মত একেবারেই ছোট চিন্তাগুলো করতে মানুষের হাজার হাজার বছর লাগার কথা নয় ! ! !

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...