বাসের পিছনের দিকের জানালার পাশে বসে আছি। ঢাকা-ময়মনসিংহ পরিবহন। কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাত এক মেয়ে বলল
-এই যে ভাইয়া, সিটটা দেয়া যাবে?
দেখি আমার মতো বয়সের একটা মেয়ে।পাশে তার মা। বললাম
-বসেন।
-tnx
-welcome.
বাস চলছে। গাজীপুর পার হওয়ার পর মেয়েটির
মা হঠাতই অসুস্থ! মেয়েটি এবার বিপদে। আমি বললাম যে বাস থামিয়ে হাসপাতালে নেয়ার কথা। তাই হলো।
হাসপাতালে ওয়ারডের বাইরে বসে আছি আমি আর সেই মেয়েটি। কেন জানি খুব চেনা লাগছে তাকে। সে আমায় বলল, আপনি না থাকলে আমার যে কি হতো!
-কি বলেন! আল্লাহ ছাড়া কিছু সম্ভব না। তা আপনি কি করেন?
-পড়ালেখা শেষ। বিয়ে হয়েছিল কিন্তু......মেয়েটির চোখ বেয়ে জল বইছে।বুঝে নিলাম।জিজ্ঞাস করলাম, কবে?
-গত বছর। চোখ মুছে আপনি কি করেন?
-এই তো ছোট একটা চাকুরী।
কিছুক্ষন নীরবতারর বললাম,
আমায় চেননি, মালিয়াত?
হ্যা, এই সে মালিয়াত, যার অপেক্ষায় আমার কতটি বছর কেটেছে একাকিত্বে।
আজ সে আমার সামনে বসা।
অনেকটা অবাক হয়েই বলল, তুমি! তুমি এমন শুকিয়ে গেছ! সেই মোটু আর নেই! তার চোখে বিস্ময়। আর আমার চোখে বিশ্বাস। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস।
বললাম আমি, মনে আছে আমাদের শেষ কবে দেখা হয়েছিল?
-না তো! তোমার মনে আছে?
-এস এস সি পরীক্ষার শেষ দিন।
-তুমি আমায় ভুলোনি?
-আমার কি তোমার ভুলার কথা ছিলো?
-আমায় না ভালোবাসতে?
-যদি বলি আজও ভালবাসি!
নিশ্চুপ হয়ে যায় সে। বলে, এয়ো কি সম্ভব?
-আমার হাতে হাত রাখবে না?
-বলতে পারি না।
উঠে চলে এলাম। বিকেল পেড়িয়ে গোধূলি। আমার প্রিয় সময়। হাল্কা বাতাস বইছে। হাসপাতালের নিরব বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম।হঠাত কে জানি পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
-ভীতু! তখন কেন বল না?
-আজকে বলব যে!
-ফাযিল। আমার মোটু।
-আমার ওটু। আমার অক্সিজেন।
দুজনই কাঁদছি। কারণ এতো, কাছে আসার কান্না!
No comments:
Post a Comment