সিলেট নিয়ে আসিফ আকবরের লেখা

১৯৯২ সালে অনুর্ধ্ব উনিশ জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপের জোনাল রাউন্ডের খেলা খেলতে গিয়েছিলাম পুণ্যভূমি সিলেটে । চাঁদপুর,টাঙ্গাইল কে হারিয়ে আমরা গেলাম ফাইনালে । সঙ্গীতশিল্পী এস.ডি রুবেল তখন চাঁদপুর জেলা দলে ছিলেন । ফাইনালের আগে তিনদিন খেলা নেই । আমার প্রেম তখন তুঙ্গে । ম্যানেজমেন্ট কে বললাম আমার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা আছে । যেতেই হবে । পরীক্ষা ছিল ,দেইনি । মিতুকে একটি ফুল দেয়ার জন্য 
ম্যাচশেষে জালালাবাদ এক্সপ্রেস ধরে স্ট্যান্ডিং টিকেটে কুমিল্লা ছুটে আসা । গভীর রাতে নানান কাহিনী করে ফুলটা দিয়েই আবার সিলেটে ফেরত গিয়ে ফাইনাল ম্যাচ খেললাম ।

মেজো ভাই পড়তেন সিলেট ক্যাডেট কলেজে । ১৯৮১ সালে আব্বা আম্মা ছোট ভাই সহ যোগদান করব প্যারেন্টস’ ডে তে । আমি ক্লাস থ্রি তে পড়ি । সাইজে ছোট হওয়াতে ট্রেনের জানালা দিয়েই আব্বা আমাদের পাস করে দিয়েছিলেন । স্বপ্নের শহর সিলেটের অবাক ব্যাপার শহরের কীণ ব্রীজ , রিক্সাতে উঠলেই মানুষ পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ব্রীজে তুলে দিতো , কিছু গুডলাক দেয়া ছিল ভদ্রতা । সুরমার শহরে আলী আমজাদের ঘড়ি , চাঁদনী ঘাটের সিড়ি, হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজার জিয়ারত করা এবং ঐতিহাসিক গজার মাছ দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল । সেই ছোট চোখগুলো
এখনো সেসব স্মৃতি রোমন্থন করে ।

গানে প্রবেশের পর বেশ কবার সিলেটে গিয়েছি শো করতে । নম্র স্বভাবের সিলেটীরা জানে কিভাবে মানুষকে সম্মান করতে হয় । আচার ব্যবহার আপ্যায়ন এবং চমৎকার সিলটী মাত আমার কাছে অদ্ভূত মোহময় লাগে । ইংল্যান্ড আমেরিকায় বহু সিলেটীর সান্নিধ্যে এসেছি । সবার আচরনেই ভালবাসার আবেশ । সঙ্গে সাতকড়ার স্বাদ ।

বাংলাদেশের সবচেয়ে অ্যাক্টিভ আসিফ ফ্যান ক্লাব সিলেটে,আমাকে ভালবেসে ছেলে মেয়েরা সারাবছর তাদের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড চালায় । সাবাশ সিলেট আসিফ ফ্যান ক্লাব । আমি রাগী মানুষ, বিয়ানীবাজারের জাকির ,বাবু, হাবিব তবুও বলতো – আফনে সেতেন ক্ষিতা লাগি , আফনে তো বাই মায়ার মানুষ !!! যখন রেগে যাই তখন এই শব্দগুলো আমাকে ঠাণ্ডা হতে উৎসাহ দেয় । অভিনন্দন সিলেট ।