Thursday, 30 April 2015

হারিয়ে পাওয়া

মাহা লাইব্ররীতে বসে কি যেন পড়ছে। প্রিন্স কাছে গিয়ে দেখল জীবনানন্দ দাশের কবিতাসমগ্র। মাহার পুরো মনযোগটা বইয়ের দিকে। প্রিন্স পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই চমকে উঠল মাহা। প্রিন্সকে অগ্রাহ্য করে বইয়ের পাতা উল্টাতে উল্টাতে বলল, "তুই লাইব্রেরীতে! সূর্য আজ কি পশ্চিমে উঠেছে?"
প্রিন্স বলল, "তোকে খুজছিলাম"।
: আমাকে কেন?
: ফেরদৌস স্যারের ক্লাস
করিস না কেন?
: ক্লাসে কিছু বুঝি না। স্যার খুব ভাল পড়ান। কিন্তু আমি কিছু বুঝি না।
: স্যার আজ খুব খেপেছে। বলেছে রোল টুয়েন্টি কে আর প্রেজেন্টই দেবেন না। পরপর আটটা ক্লাস মিস!
মাহা হাই তুলতে তুলতে বললঃ কি আর করা। এই সাবজেক্টে ফেল করব। পরের বছর পরীক্ষা দেব।
: ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছিস।
: এখন কথা বলে জ্বালাতন করিস না তো।
: একটা গুরুত্বপূর্ণ নিউজ দিলাম এটাকে জ্বালাতন বলছিস?
: আর পড়াশুনা নিয়ে ভেবে কি হবে? দুমাস পরে আমার বিয়ে। ঘর সংসার করব। বাচ্চা কাচ্চা মানুষ করব। সুখের জীবন। আর পড়াশুনা করতে ইচ্ছা হয় না।
প্রিন্স ভীষন হতবাক হয়ে বলে, "তোর বিয়ে ?!! তোর ?!"
: বাহ! বয়স তো কম হয় নি। বিয়ে করবো না। আইবুড়ো হয়ে থাকব নাকি?!!
: কিন্তু তোর ক্যারিয়ার। মাস্টার্স কমপ্লিট না করেই বিয়ে?
: বিয়ের পর মাস্টার্স কমপ্লিট করব। আর আমার চাকরি করার কোন ইচ্ছা নেই।
প্রিন্স শুকনো মুখে বলল, "ও আচ্ছা"।
: ছেলেদের ঢাকা শহরে দুটো বাড়ী। একটা মোহাম্মাদপুরে আর একটা উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে। বিশাল বড়লোক। ছেলে একটা বিদেশী এন জিওর মনিটরিং অফিসার।
: ছেলের হাইট কত?
: পাঁচ ফিট ছয়।
: তোর সাথে মানাবে না। তুই তো পাঁচ ফিট চার। আরও লম্বা ছেলের প্রয়োজন।
: আমার তো জিরাফ দরকার নেই। দরকার মানুষ। পাঁচ ফিট ছয় পারফেক্ট হাইট।
: ছেলের নাম কি?
: কাজল।
: কাজল?! এটা তো মেয়েদের নাম। ছেলের চেহারায় কি মেয়েলী ভাব আছে?
: ছিঃ! কি বলিস! মেয়েলী ভাব থাকবে কেন? পুরোদস্তুর পুরুষ। এই দেখ ছবি। অত্যন্ত সুপুরুষ।
: বাহ! এখন থেকেই এত মায়া? ছবি নিয়ে ঘুরছিস?
: লজ্জা দিস না।
প্রিন্স ছবিটা হাতে নেয়। আসলেই অত্যন্ত সুদর্শন পুরুষ। প্রিন্স হিংসাভরা দৃষ্টি নিয়ে ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে। হঠাৎ প্রিন্সের কাছে জগৎটাকে অর্থহীন মনে হয়। কত স্বপ্ন বুনেছিল প্রিন্স। আর এক বছর পরই মাস্টার্স কমপ্লিট হবে। একটা ভাল চাকরি জোগাড় করবে। তারপর মাহা কে বলবে, "আমার সাথে সারাজীবন থাকবে? একসাথে চলবে বাকিটা পথ ?" মাহা নিশ্চয়ই না বলতো না। আসলে দোষটা প্রিন্সেরই। এতবছর একসাথে পড়ছে। অথচ মনের কথাটা বলাই হয় নি যুঁথিকে। আসলে প্রিন্স ভাবতেই পারে নি মাহা ওর পাশ থেকে দূরে চলে যেতে পারে।
মাহা : কি রে চুপ করে গেলি কেন?
: তোর বরটা খুব সুন্দর।
: থ্যাংক ইউ। কবে যে ও আমার হবে।
: আর দেরি সহ্য হচ্ছে না?
: না রে। সারারাত ওর কথা ভাবতে ভাবতেই পার করে দিই।
: বাহ! ভাল। খুব ভাল।
প্রিন্স উঠে গেল। প্রিন্স উঠে যাওয়ার পরই মাহা জোরে হেসে উঠল। লাইব্রেরির সবাই বিরক্তমুখে মাহার দিকে তাকাল।
প্রিন্স পুরো বিষয়টি ওর বন্ধু এবং ক্লাসমেট জ্যাকের সাথে শেয়ার করে। জ্যাক ঠান্ডা মাথার ছেলে। কোন কিছুতেই সহজে ঘারড়ায় না। জ্যাক প্রিন্সের কাঁধে হাত রেখে বলল, "দোস্ত,চিন্তা করিস না। আমি আছি।"
এদিকে জল আনেক দূর গড়িয়েছে। পরদিন মাহা কাজলকে ক্যাম্পাসে নিয়ে এল। প্রিন্স এবং জ্যাক রক্ত শূন্য দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে রইল। মাহা ওদের দেখে কাজলকে নিয়ে এগিয়ে গেল। কাজলের হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে মাহা। প্রিন্স মনে মনে ভাবল এতটা ন্যাকামি না করলেই কি নয়! মাহা প্রিন্সের দিকে তাকিয়ে বলল "চিনতে পেরেছিস ওকে! ও কাজল।আমার ইয়ে।" কাজল হাসিমুখ প্রিন্সের দিকে হাত বাড়াল। কিন্তু প্রিন্স হাত বাড়াল না। ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে রইল।
কাজল বলল "ভাই আপনাদের কথা ওর মুখে অনেক শুনেছি। বিশেষ করে প্রিন্স সাহেবের কথা। এত বেশি শুনেছি যে প্রিন্স সাহেবকে আমার হিংসা করতে ইচ্ছা হয়েছে।'  প্রিন্স মনে মনে বলল, "হারামজাদা! তুই মর। শালা বদের বদ"! মাহা এবার জ্যাকের দিকে তাকিয়ে বলল, "জ্যাক তোর ব্যাগে তো সবসময় ক্যামেরা থাকে আমাদের কিছু ছবি তোল তো। আর আমার মোবাইল দিয়ে ও কয়েকটা ছবি তোল"। কাজল আর মাহা অন্তরঙ্গভাবে বেশ কিছু ছবি তোলে। প্রিন্স মনে মনে ভাবে, "পৃথিবী থেকে কি লজ্জা উঠে গেল? নাকি মাহা দেখাতে চাইছে যে ও অনেক সুখী"।
ছবি তোলা শেষে মাহা আর কাজল চলে যায় ক্যাম্পাসের উত্তর পার্শে। ক্যাম্পাসের সবচেয়ে নির্জন এলাকায়।
প্রিন্স জ্যাককে বলল, "জ্যাক সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। আর কোন আশা নেই"।
জ্যাক: দোস্ত আমি এখন ও মরে যাই নি। ধৈর্য ধর"।
প্রিন্স ভাবতে লাগল মাহার জন্য ও পাগলের মত কত কিছুই না করেছে। নিজে ভালভাবে এসাইনমেন্ট না করে মাহার এসাইনমেন্ট করে দিয়েছে। পরীক্ষার সময় ঝুকি নিয়ে মাহাকে দেখিয়েছে। মাহা অংকে দুর্বল। তাই মাহার বাসায় গিয়ে ম্যাথমেটিক্যাল টার্মগুলো বুঝিয়ে দিয়েছে। প্রতিমাসে মাহার মোবাইলে টাকা পাঠিয়েছে। মাহা অবশ্য জানত না কে ওর মোবাইলে টাকা পাঠায়। প্রিন্স ভেবেছিল একদিন বলবে। মনের সব কথা ওকে বলবে। কিন্তু বড্ড দেরী হয়ে গেছে। অবশ্য মাহা ও ওর জন্য কম করে নি। যে কোন বিপদে আপদে মাহাই এগিয়ে এসেছে সবার আগে। প্রতিনিয়ত ওকে নানাভাবে শাসন করেছে। নিয়মিত চুল কাটা, সেভ করা, বেশি রাতে বাইরে না থাকা, বাইরের খাবার না খাওয়া এসব অভ্যাস যুঁথিই করিয়েছে।
এছাড়া প্রিন্সের গল্প- কবিতা লেখার পেছনে ও মূল অনুপ্রেরণা মাহা। কতদিন যে ক্যাম্পাসের বটতলায় বসে মাহা কে কবিতা শুনিয়েছে প্রিন্স। সেই বটতলার দিকে দৃষ্টি যেতেই প্রিন্সের মনে হলো সবকিছু আজ শূন্য। চারিদিকে আসীম শূন্যতা।
জ্যাক হঠাৎ বলে উঠে "যে করে হোক মাহার বিয়েটা ভাঙতে হবে। তুই শালা গর্দভ এতদিনেও মনের কথাটা মাহাকে কে বলতে পারলি না। শোন মাহা
যখন ওর মোবাইলটা আমার হাতে দিল তখন আমি কায়দা করে কাজলের নাম্বারটা নিয়েছি"।
: তো----? নাম্বার দিয়ে কি হবে?
: আরে ওই ব্যাটাকে হুমকি দিতে হবে। মাহা সম্পর্কে উলটা পালটা কথা বলতে হবে।
: আমি পারব না।
: মানে?
: মাহা সম্পর্কে উল্টাপাল্টা কথা আমি বলতে পারব না।
: ইশ! ওরে আমার সাধু বাবা। এত সাধু হলে মাহা কে পাওয়া লাগবে না। বসে বসে আংগুল চোষ।
দুদিন পরে পার্কে বসে প্রিন্স, জ্যাক এবং ওদের আরেক বন্ধু ময়নুল বাদাম চিবুচ্ছিল। জ্যাক এবং মইনুল চেষ্টা করছিল প্রিন্সের মন ভাল করার। কিন্তু প্রিন্স হ্যাঁ, না ছাড়া কোন কথাই বলছে না। হঠাৎ ময়নুল লাফিয়ে উঠল। প্রিন্স বলল, "কি রে লাফিয়ে উঠলি কেন?
: ওই দেখ সামনের বেঞ্চে।
: সামনের বেঞ্চে কি?
: কাজল আর একটা মেয়েকে নিয়ে বসে আছে। দেখ কাজল মেয়েটার কপালে টিপ পরিয়ে দিচ্ছে। টিস্যু দিয়ে লেপ্টে যাওয়া লিপষ্টিক মুছে দিচ্ছে।
: আরে! তাই তো! এতো কাজল ই!
: শালা একটা ক্যারেক্টারলেস।
: কি করবি এখন?
: ওদের ছবি তুলতে হবে। তারপর মাহাকে দেখাতে হবে।
: কিভাবে ছবি তুলবি আমাদের তো চিনে ফেলবে।
: ময়নুলকে পাঠাব। ওকে কাজল চিনবে না।'
ময়নুল বুদ্ধিমান ছেলে। অল্পকথায়ই সব বুঝে গেল। ময়নুল  বলল, "দোস্ত চিন্তা করিস না। আমি ছবি তুলে আনছি"। জ্যাক ওর ক্যামেরাটা ময়নুলকে দেয়। ময়নুল কাজলের আশেপাশে কয়েকটি চক্কর দেয়। ময়নুল এমন ভাব দেখাচ্ছে যে ও পার্কের অপরূপ সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে ছবি তুলছে। যেন ও এক আদর্শ প্রকৃতি প্রেমিক। কাজল আর মেয়েটা এতটাই প্রেমে ব্যস্ত যে ময়নুলকে খেয়ালই করল না। ময়নুল অনেকগুলো ছবি তোলে। ময়নুল ফিরে আসলে ওরা গাছের আড়াল থেকে কাজল আর মেয়েটিকে লক্ষ্য করতে লাগল। কাজল আর মেয়েটি আইসক্রিম খেল,বাদাম খেল,ফুচকা খেল। আর ন্যাকামির কথা বলে শেষ করা যাবে না। দৃশ্যগুলো দেখে প্রিন্স, ময়নুল,জ্যাক খুব আনন্দ পেল।প্রিন্সের মুখে হাসি ফুটল। রাতে প্রিন্স মাহাকে ফোন করল।
: হ্যালো, মাহা তোর সাথে খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
: এত হাঁপাচ্ছিস কেন? কি বলবি বল।
: একটু বাইরে বেরুতে পারবি?
: না। এত রাতে--- মাথা খারাপ!
: মাহা, কাজল একটা ফ্রড, বড় ফ্রড। ও তোকে ঠকিয়েছে। ও -----।
: কি উল্টপাল্টা বলছিস? তোর মাথা ঠিক আছে তো?
: আজ পার্কে দেখলাম ও একটা মেয়ের সাথে ডেটিং করছে। অনেক ধরনের ন্যাকামিপনা করেছে।
: শোন তোর সাথে কাজলের কিসের এত শক্রুতা? পুরুষমানুষ এত হিংসুটে হয়??
: আমি ওকে হিংসা করব কেন? আমরা ওদের ছবি তুলেছি।
: ছবি তুলেছিস? নাকি ছবি জোড়া লাগিয়েছিস? শোন কাজলের প্রতি আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। ওর সম্পর্কে উল্টাপাল্টা কথা বলবি না। আর প্লিজ ছোটলোকের মত কোন কাজ করিস না।
: তুই আমাকে এমন করে বলতে পারলি!!!
: হ্যাঁ পারলাম।
মাহা ফোন রেখে দিল। প্রিন্স অবাক হয়ে ভাবে ভালবাসা মানুষকে এতটা অন্ধ করে দেয়!! প্রিন্স সিদ্ধান্ত নিল মাস্টার্স আর কমপ্লিট করবে না। ওর বড় ভাই ইংলান্ডের সিটিজেনশিপ পেয়েছে। প্রিন্সকে বারবার চলে আসতে বলছে। শুধু মাহার টানে প্রিন্স যায়নি। এবার ওকে যেতেই হবে। প্রিন্সের সবচেয়ে বড় কষ্ট মাহা একটা প্রতারককে বিয়ে করবে। বিয়ের পর মাহা বুঝবে কত বড় ভুল ও করেছে। আচ্ছা মাহা কি ওকে একটু ও ফিল করবে না? এত ভাল আন্ডারষ্ট্যান্ডিং, বন্ধুত্ব কিছুই মনে থাকবে না মাহার? প্রিন্সের সবসময়কার ধারনা ছিল মাহা ওকে পছন্দ করে। কিন্তু প্রিন্স আসলে বোকার স্বর্গে বাস করছে। নিজের প্রতি ঘৃণা ধরে প্রিন্স।
পরদিন ক্যাম্পাসের পেছনের দিকে পুকুরে পাড়ে একা বসে ছিল প্রিন্স। কাল সারারাত ঘুম হয় নি। শুধু মনে হয়েছে মৃত্যু কি সব সমস্যার সমাধান? নাকি দূরে চলে যাওয়া? পরক্ষণেই মনকে শক্ত করেছে প্রিন্স। তাকে দূরে চলে যেতে হবে। মাহা থেকে অনেক দূরে। হঠাৎ চুড়ির শব্দে প্রিন্স চমকে উঠে। পেছনে ফিরে দেখে মাহা দাড়িয়ে। কি সুন্দর করে সেজেছে মাহা। কালো টিপ। অথচ হাতে নীল চুড়ি। তাতেই চমৎকার মানিয়েছে ওকে। মুখটা কত সিগ্ধ, কোমল, নিষ্পাপ।প্রিন্স ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।
মাহা: বসতে পারি?
: অনুমতির কি আছে?
: মন খারাপ?
: না মন খারাপ কেন হবে?
: তুই এত বোকা কেন?
: বোকাই তো। বোকা না হলে এত বছর ধরে তোকে------।
: কি? এত বছর ধরে কি?
: না থাক।
: হ্যাঁ থাক। তোকে কিছু বলতে হবে না। সারাজীবন মনের কথা মনেই রাখ।
: বলে লাভ নেই। সব শেষ।
: তবু বল।
: তোকে ভালবসতাম।
: এখন বাসিস না ?
: বাসি। তবে এখন ভালবাসা না বাসা সমান কথা।
: গাধা কোথাকার! একটা মেয়ের মন এত বছরেও বুঝলি না। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তোর মুখ থেকে ভালবাসার কথা শুনতে আমি কতই না আকুল ছিলাম। আর তুই একবার ও বলতে পারলি না। শেষ পর্যন্ত কাজল থেরাপিতে কিছুটা কাজ হলো।
: মানে?!!!
: আরে বোকা। কাজল আমার খালাত ভাই। আমার চেয়ে দু'বছরের ছোট। একটা বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ছে। ওর বাড়ী, চাকুরি সম্পর্কে যা বলেছি সব ভুয়া। কাজল রূপা নামে একটা মেয়েকে ভালবাসে। গতকাল পার্কে রুপার সাথেই কাজলকে দেখেছিস। কাজলের কথা বলে তোর ভালবাসাকে পুরোপুরি জাগিয়ে দিলাম। পুরো বুদ্ধিটা অবশ্য জ্যাকের শিখিয়ে দয়া। কাল ফোনে তোকে যে কথাগুলো বললাম তাও জ্যাকের শিখিয়ে দেয়া"।
প্রিন্স হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে। ওর মাথা ঘুরতে লাগল। এটা স্বপ্ন না তো। মাহাকে ছুয়ে দেখলে ও হারিয়ে যাবে না তো!
মাহা : আমাকে সুন্দর লাগছে না।'
প্রিন্স মাথা নাড়ায়। মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না।
:তোর জন্য সেজেছি। শুধু তোর জন্য।
প্রিন্সের চোখের কোণে পানি জমে।
: ভ্যাবদা পুরুষ আমার একদম পছন্দ না। চোখে পানি কেন? আচ্ছা তোর লেখা আমার সবচেয়ে প্রিয় কবিতার কয়েক লাইন শোনা তো।'
প্রিন্স বিড়বিড় করে বলতে থাকে,
"আমার কুশ্রী জীবনে
তোমায় ভেবেছি আশার সঞ্চারিনী।
বৃহৎ অভিলাষে, শূন্যতা সরিয়ে
গড়েছি হরেক রঙের স্বপ্ন নীড়।
তোমার হাতের মায়াময়ী স্পর্শে,
আমি ভয়ানক প্লাবণকে ভেবেছি নব্যপুলক।
আমি মহাপুরুষ নই, নই শুভ্র মানব;
তবু তোমার স্বপ্নপুরুষ হতে ছুটছি আলোকের দিকে"।
মাহা : অসাধারন। তোর কবিতা শুনেই আমি বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে পারব। শোন, আজ সারাদিন আমরা একসাথে থাকব। ঘুরব, প্রেম করব, দুষ্টমি করব, ন্যাকামি করব, অব্যক্ত কথা বলব। আর আমাদের স্বপ্ননীড়কে সাজাব নিজেদের মতন করে। "
প্রিন্স কিছু বলতে পারে না। গলায় যেন কিছু আটকে আছে ওর।
মাহা : তুই রাজী থাকলে কাজি অফিসে ও যেতে পারি। বল, 'কবুল।'
প্রিন্স মাহার মুখ স্পর্শ করে বলল "কবুল"।

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...