“দিস সেভেন্টিন ইয়ারস ওল্ড শোয়িং ভেরি লিটল রেস্পেক্ট টু দ্য এল্ডার স্টেটসম্যান”- বক্তা ইয়ান বিসপ, সেভেন্টিন ইয়ারস ওল্ড হলেন আমাদের তামিম ইকবাল, এল্ডার স্টেটসম্যান হলেন ভারতের জহির খান (মার্চ ১৭, ২০০৭)
এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের খুব কম ব্যক্তিই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে এই ভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর
এই ভূখন্ড পরিচিত হয় পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে। পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানীয় দল কায়েদে আজম ট্রফিতে অংশ নেয়া শুরু করে ১৯৫৪ সাল থেকে। ১৯৫৫ সালের জানুয়ারি মাসে নবনির্মিত ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) প্রথম টেস্ট ক্রিকেট এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের খুব কম ব্যক্তিই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে এই ভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর
অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৯ সালের মাঝে এই স্টেডিয়ামে মোট ৭টি টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়। তবে পূর্ব পাকিস্তানের কোন খেলোয়াড়ের পাকিস্তানের মূল একাদশে খেলার সুযোগ হয়নি। তবে ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে ঢাকায় অনুষ্ঠিত পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের রকিবুল হাসান সুযোগ পান।
মুক্তিযুদ্ধে ক্রিকেটঃ ২৭ এপ্রিল পাকিস্তান ক্রিকেট দল ইংল্যান্ডে পা রাখার পর থেকেই শুরু হয় বাঙালীদের বিক্ষোভ। ৫ মে ফেয়ার হোটেলে পাকিস্তান দলের সম্বর্ধনামূলক এক ডিনারে তারা ঢোকার সময় বাঙালীরা ব্যানার প্ল্যাকার্ড নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ জানায়। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় ২২ জন বাঙালীকে। বার্মিংহাম টেস্টের আগে পাকিস্তান দলের প্র্যাকটিসের বাইরে নিয়মিতই মিছিল করেছেন বাঙালীরা। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভটি হয়েছিলো টেস্ট ম্যাচ শুরুর দিন। চার পাঁচটি বাস ভর্তি হয়ে বাঙালীরা মাঠের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেছেন, উড়িয়েছেন স্বাধীন বাংলার পতাকা। পোড়ানো হয়েছে পাকিস্তানের পতাকা। সেই ম্যাচের দিন পাকিস্তানীদের সঙ্গে তাদের তুমুল বিতন্ডা হয়েছে, যদিও সেদিন কোনো হামলা হয়নি।
একই সিরিজে একটি ব্যাটে স্বাক্ষর করেছিলো পাকিস্তান ও ইংলিশ ক্রিকেট দল। লর্ডসে ওই ব্যাটটি নিলামে তোলা হয়েছিলো পাকিস্তানী শরণার্থীদের সাহায্যে। সেই টাকা ইয়াহিয়া সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো। সে টাকার ব্যবহার কিসে হয়েছিলো তা জানা যায়নি।
ফ্রাঙ্ক স্ট্যানলি জ্যাকসন হচ্ছেন ইংল্যান্ডের ১৭তম টেস্ট অধিনায়ক। ১৯০৫ সালে তিনি ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। খেলেছেন ২০টি টেস্ট ম্যাচ, যার মধ্যে ৫টি টেস্টে ছিলেন অধিনায়কের ভূমিকায়। ১৮৯৪ সালে হয়েছিলেন উইজডেনের “ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার”। জেনে রাখুন, ফ্রাঙ্ক জ্যাকসন ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯২৭ – ১৯৩২ পর্যন্ত বাংলার গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড গঠিত হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ক্রিকেট লীগ শুরু হয়। ১৯৭৪/৭৫ মৌসুমে জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু হয়, জেলা পর্যায়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগ লীগ আরম্ভ হয়। ধীরে ধীরে অন্যান্য প্রতিযোগিতা, যেমনঃ শহীদ স্মৃতি ক্রিকেট, দামাল সামার ক্রিকেট, স্টার সামার ক্রিকেট, জাতীয় যুব ক্রিকেট, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা প্রভৃতি শুরু হয়। ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বর মাসে এম.সি.সি. প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে খেলতে আসে। ২৬ জুলাই, ১৯৭৭ বাংলাদেশ আই সি সি-র সহযোগী সদস্যপদ লাভ করে। ৭০ দশকের শেষ দিক হতে বাংলাদেশে শ্রীলংকা, ভারত, পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন দল ট্যুরে আসতে শুরু করে। এম.সি.সি. বেশ কয়েকবার এদেশে আসে। ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম আই সি সি ট্রফিতে বাংলাদেশ অংশ নেয়। ১৯৮২ সালে অংশ নেয় দ্বিতীয় আই সি সি ট্রফিতে। এতে তারা চতুর্থ স্থান লাভ করে।
১৯৮৬ সালের মার্চে শ্রীলংকায় আয়োজিত দ্বিতীয় এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ তাদের প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে। একই বছর তৃতীয় আই সি সি ট্রফিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ। ১৯৮৮ তৃতীয় এশিয়া কাপ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়। এই এশিয়া কাপ এ ভেন্যু ছিল ঢাকা এবং চট্টগ্রাম। ১৯৯০ সালে শারজাহতে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলেশিয়া কাপে বাংলাদেশ অংশ নেয়। ঐ বছরই তারা খেলে চতুর্থ আই সি সি ট্রফি। এতে তারা তৃতীয় স্থান লাভ করে। এসময় আই সি সি ট্রফির শীর্ষ দল বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সুযোগ পেত। ‘৯০ এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ চতুর্থ এশিয়া কাপে অংশ নেয়। ১৯৯৪ সালে পঞ্চম আই সি সি ট্রফি হয় কেনিয়াতে। এসময় থেকে নিয়ম করা হয় এই প্রতিযোগিতার সেরা ৩টি দল পরবর্তী বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। কেনিয়ার নাইরোবি জিমখানা মাঠে অনুষ্ঠিত খেলায় বাংলাদেশ স্বাগতিক দলের কাছে হেরে সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়।
১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় ৬ষ্ঠ আই সি সি ট্রফি। পুরো প্রতিযোগিতা কৃত্রিম টার্ফ বসানো পীচে অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে তৎকালীন অধিনায়ক আকরাম খানের অসামান্য ব্যাটিং দৃঢ়তায় হল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ( সেরা ৩টি দল এই সুযোগ পায় )। বৃষ্টি বিঘ্নিত ফাইনালে কেনিয়াকে ১ উইকেটে পরাজিত করে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। একই বছরে বাংলাদেশকে আই সি সি ওয়ানডে স্ট্যাটাস প্রদান করে। ১৯৯৮ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত একটি ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতায় কেনিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের প্রথম জয় লাভ করে। ঐ বছরের অক্টোবর মাসে সব টেস্ট খেলুড়ে দেশকে নিয়ে বাংলাদেশে আয়োজিত হয় নকআউট ধাঁচের মিনি বিশ্বকাপ।
এর পর থেকে আর বাংলাদেশকে পেছনে তাকাতে হয়নি।এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ।আমরা কোটি কোটি মানুষ স্বপ্ন দেখছি এখন বিশ্বকাপের।অপেক্ষায় আছি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে সেই দিনের।
( সব তথ্য সংগৃহীত )
No comments:
Post a Comment