ভারতীয় টিভি চ্যানেলের আগ্রাসনে বাড়ছে পারিবারিক কলহ। জীবনের আনন্দময় সময় উপভোগের বদলে টিভি স্ক্রিনেই চোখ রেখে কেটে যাচ্ছে জীবনের বৃহত্তম সময়। যৌথ পরিবারের ঐতিহ্য থেকে সরে এসে একক এমনকি সন্দেহকেন্দ্রিক জীবনে অব্যাহত পরিবারগুলোতে শুধু অশান্তি।
এ থেকে মুক্তির কোনো উপায় দেখছেন না অনেকে
এ থেকে মুক্তির কোনো উপায় দেখছেন না অনেকে
সংস্কৃতি শুধু বাণিজ্য নয়, একটা জাতিকে এগিয়ে নেয়ার হাতিয়ার। আমরা সে হাতিয়ারই তুলে দিয়েছি
ভারতীয় চ্যানেলের হাতে।
‘বছর আটেক আগেও মা, চাচী, খালা, বোন, পাড়াত-খালাত-মামাত বোন আর ভাবীরা দুপুরে খাওয়া সেরে হয় ঘুমাতেন; না হয় কয়েকজন মিলে সুখ-দুঃখের কথা বলতেন। কিন্তু আজকালকার মা, চাচী, খালা, বোন, ভাবীরা দুপুরে রিমোট দখলে নেন আর রিমোটের দখল ছাড়েন গভীর রাতে। টিভির সামনে বসে কী দেখেন আজকালকার আধুনিক নারীরা? বিটিভি না বিবিসি? ডিসকভারি, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি, এনিমেল প্যানেট নাকি কিডস চ্যানেল? নিও স্পোর্টস নাকি স্টার স্পোর্টস? উত্তর যে ‘না’ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাহলে কী দেখছেন? আপনারা যে মনে মনে বলছেন স্টার প্লাস, জি বাংলা, সাহারা ওয়ান, সনি, এনডিটিভি ইমেজিং তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই।’
‘মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির এ যুগে পার্শ্ববর্তী দেশের বিনোদনওয়ালারা আমাদের দেশীয় চ্যানেলগুলোকে তাদের ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করতে না দিলেও আমাদের দেশের সুশীল(?) বিনোদনওয়ালারা পার্শ¦বর্তী দেশের চ্যানেলগুলোকে সাদরে আমাদের ড্রয়িংরুমে নিয়ে এসেছেন। ড্রয়িংরুমে প্রবেশের সুযোগ পেয়েই আমাদের নারীদের মনের গভীরে প্রবেশ করেছে সিরিয়ালের উর্বশী, শর্বশী, কুমকুম, মেনকা, পার্বতী আর পাখিরা।’
‘পুরুষ সারা দিন পরিশ্রম করে মাস শেষে বেতন নিয়ে আসেন আর সে টাকা থেকে ডিশ সংযোগের বিল দিয়ে আমাদের নারীরা এক দিকে শিখছেন বউ শাশুড়িকে, শাশুড়ি বউকে, ননদ ভাবীকে, ভাবী ননদকে কিভাবে সাইজ করে; স্বামীকে কী করে দৌড়ের ওপর রাখা যায়; কিভাবে স্বামী তালাক দেয়ার পর দেবরকে বিয়ে করে সংসারে আগুন জ্বালাতে হয়। অপর দিকে নারীরা গিলছেন; কী করে সিরিয়ালের নায়িকা দুই স্বামীকে ম্যানেজ করছেন আর পরকীয়ার রগরগে দৃশ্য।
আগে নারীদের আড্ডায় নিজেদের সাংসারিক আলাপ হতো আর এখন হয় সিরিয়ালের উর্বশী, পার্বতী, কুমকুমদের ভার্চুয়াল পরিবারের সমস্যা; আগে চলত ইংরেজি বলার প্রতিযোগিতা আর এখন চলে হিন্দি বলার প্রতিযোগিতা। যে কাহিনী দিয়ে এক পর্বের নাটকও হবে না সে কাহিনীকে লম্বা লম্বা করে কয়েক শ’ পর্ব বানিয়েও সে কাহিনীকে আরো কয়েক শ’ পর্ব লম্বা করতে পুনর্জন্ম করে ছাগলামি করা হয়।’
আগ্রাসন : ভারতীয় সংস্কৃতির এ রকম আগ্রাসনে দেশ বিপর্যস্ত। চলমান আগ্রাসন নতুন প্রজন্মকে নিজস্ব সংস্কৃতি বলয় থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে তিন হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণীর প্রোফাইল দেখে জানা গেছে, যে দেশটি বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য রক্ত দিয়েছে, সে দেশের নতুন প্রজন্মের প্রিয় সিনেমার তালিকায় হিন্দির আধিপত্য। বাংলা সিনেমার নাম নেই বললেই চলে। একই সাথে প্রিয় টিভি শো’র জায়গায় হাতেগোনা দু-চারজন বাদে সবারই প্রিয় ভারতীয় টিভি চ্যানেলে সিরিয়াল ও রিয়্যালিটি শো।
আগ্রাসন : ভারতীয় সংস্কৃতির এ রকম আগ্রাসনে দেশ বিপর্যস্ত। চলমান আগ্রাসন নতুন প্রজন্মকে নিজস্ব সংস্কৃতি বলয় থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে তিন হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণীর প্রোফাইল দেখে জানা গেছে, যে দেশটি বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য রক্ত দিয়েছে, সে দেশের নতুন প্রজন্মের প্রিয় সিনেমার তালিকায় হিন্দির আধিপত্য। বাংলা সিনেমার নাম নেই বললেই চলে। একই সাথে প্রিয় টিভি শো’র জায়গায় হাতেগোনা দু-চারজন বাদে সবারই প্রিয় ভারতীয় টিভি চ্যানেলে সিরিয়াল ও রিয়্যালিটি শো।
ফেইসবুকে প্রফাইল পিকে বাংলাদেশের পতাকার ছবি দিলেই শুধু দেশ প্রেম প্রকাশ পায় না।দেশের জন্য কিছু করা, দেশের স্বার্থ বিরোধী কাজের প্রতিবাদ করাকে দেশ প্রেম বলে।
No comments:
Post a Comment